আঁকতে না পারলেও চারুকলায় ভর্তি!

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চারুকলা বিভাগে ভর্তিচ্ছুদের জন্য কোনো শর্ত রাখা হয়নি। নেই কোনো ব্যাবহারিক পরীক্ষাও। প্রশ্নপত্রেও থাকছে না চারুকলাসংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন। এমনকি আঁকতে না পারলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে ভর্তি হওয়া যাবে। প্রথম বছর শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতেই এ বছর চারুকলায় কোনো শর্ত রাখা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে কোনো যোগ্যতা যাচাই-বাছাই ছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তখন ৩০টি আসন, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরি এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও আসবাবপত্র থাকার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। ইউজিসির অনুমোদন পেয়ে কলা অনুষদের অধীনে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হচ্ছে চারুকলা বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪তম বিভাগ হচ্ছে এটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রকাশিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হয় চলতি বছরের দ্বিতীয় দিন। তা ছাড়া ভর্তি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ‘বি’ ইউনিটে হবে চারুকলা বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা। ওই ইউনিটে মোট ৬০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ২০ নম্বরের লিখিত (এককথায় উত্তর) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এমসিকিউতে ২৫টি করে বাংলা এবং ইংরেজি প্রশ্ন থাকবে। তা ছাড়া সাধারণ জ্ঞান থাকবে ১০টি। চারুকলা বিভাগে ভর্তির জন্য কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। থাকছে না ব্যাবহারিক পরীক্ষা। বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করেই ভর্তি হতে পারবে চারুকলায়। তবে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে ভর্তির জন্য এমসিকিউর পাশাপাশি যোগ্যতা প্রমাণের জন্য দিতে হয় ব্যাবহারিক পরীক্ষা। ব্যাবহারিকে উত্তীর্ণরাই ভর্তি হতে পারে চারুকলায়।

শিক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়মিত পেতে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা Log In করুন।

Account Benefitচারুকলায় ভর্তিতে কোনো শর্ত না থাকায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়। দেয়ালে দেয়ালে ‘চারুকলায় ব্যাবহারিক হবে না কেন?’—এমন পোস্টারিং করা হয়েছে। প্রথম বছরেই যোগ্যতা যাচাই-বাছাই না করে এই বিভাগে ভর্তি করানো হলে তা গোড়ায় গলদ বলে বিবেচিত হবে বলে মনে করেন তাঁরা। এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেন, ‘বৃত্ত আঁকতে না পারা শিক্ষার্থীও একদিন চারুকলায় পড়বে। এটি সম্ভব হবে শুধু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। যা আমাদের জন্য লজ্জার হবে। আশা করি, প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।’ পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক আলতাফ হোসেন রাসেল বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে বিভাগ খোলা, বিভাগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জ্ঞান থাকা শিক্ষক না থাকার কারণে এমনটি হচ্ছে।

এ বিষয়ে ‘বি’ ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কিভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে এটি কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত। আমরা পরীক্ষার আয়োজন করব মাত্র। আগামী ১৭ তারিখ ইউনিটের সভা আছে। সেখানে সব বিভাগের শিক্ষকদের মতামত নেওয়া হবে।’

কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘প্রথমবার বলে কোনো শর্ত রাখা হয়নি। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় তাদের আগ্রহ এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। হয়তো আগামীতে শর্ত আরোপ করা হতে পারে।’
More detail about
Islamic University