
উপাচার্য, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়
এই ‘সেন্ট্রাল সাপোর্ট সিস্টেম’-এ পৃথিবীর সমস্ত জার্নাল থাকবে, সমস্ত বিখ্যাত লেখকদের বইসমূহ থাকবে। এখানে প্রবেশ করলে একজন শিক্ষার্থীর মনে হবে, আমি কেন এখান থেকে বাইরে যাবো! আমি এখানেই সমস্ত দিন কাটাবো”
-এডুআইকনের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ।
এডু আইকন: কিভাবে শুরু হলো রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যলয়ের?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কুষ্টিয়ার এক জনসভায় প্রথম ‘রবীন্দ্রনাথ’ এর নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা ব্যক্ত করেন। এরপর দীর্ঘ সময়েও এর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না হলেও ৯০’ এর দশকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম স্যার কুষ্টিয়ার শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথের নামে ‘ট্যাগোর পিস ইউনিভার্সিটি’ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালে রবীন্দ্র জয়ন্তীতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেয়ার পর ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে এ বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। এরপর ২০১৭ সালের জুন মাসে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়।
এডু আইকন: প্রথমেই শুধুমাত্র কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু কেন?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় ও অনুষদের অনুমোদন করে ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)’। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে ১৪টি বিষয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়, যার মধ্যে বাণিজ্য অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ, চারুকলা, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান, কৃষি অনুষদ ছিল। তবে ইউজিসির দল যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যায় তখন এসমস্ত বিভাগ চালুর জন্য পর্যাপ্ত পরিবেশ ও সরঞ্জমাদির না থাকায় বিভাগগুলোর অনুমোদন দেয়া হয় নি। এবারের শিক্ষাবর্ষের জন্য আবার ইউজিসির কাছে নতুন কিছু বিষয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে, তাই আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো নতুন কিছু বিষয়ের সংযোজন হতে পারে। তবে আমি মনে করি, শিক্ষার্থীদের শুধু বিষয়ভিত্তিক উচ্চশিক্ষার প্রতিযোগিতায় না থেকে কর্মমুখী শিক্ষায় অধ্যায়ন করে দেশকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করতে হবে।
এডু আইকন: ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে উত্তীর্ণদের জন্য সব থেকে কম আসন ছিল কেন?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: যেহেতু আমাদের এখানে শুধু কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ চালু রয়েছে, সেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি গ্রহণ করা হয়েছে মানবিক বিভাগ থেকে। বাণিজ্য বিভাগ থেকে যেসকল শিক্ষার্থী পড়তে আসবে একমাত্র ‘অর্থনীতি’ ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে তাদের পড়াশোনার আগ্রহ কম থাকবে। তাই গত শিক্ষাবর্ষে বাণিজ্য বিভাগ থেকে সব থেকে কম শিক্ষার্থী ভর্তি গ্রহণ করা হয়।
এডু আইকন: ‘রবীন্দ্র অধ্যায়ন’-এ পড়াশোনা শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে কিভাবে সহায়ক?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল দর্শনই হচ্ছে সাংস্কৃতিমুখী ভালো মানুষ তৈরি করা। তবে, আমরা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিয়ে যদি প্রথমে একটু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকেই তাকাই, এখানে এমন কিছু বিভাগ রয়েছে যেসকল বিভাগে পড়াশোনা করে বের হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশে সেই সম্পর্কিত কোনো কাজের সাথে যুক্ত হতে পারছে না! যারা কলেজের কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চায়- ‘রবীন্দ্র অধ্যায়ন’ বিভাগ তার জন্য কার্যকর হবে না। রবীন্দ্র অধ্যায়নে পড়াশোনা যারা করবে তারা আগামী ১০ বছরে অধিকাংশ মিডিয়া হাউজকে নিয়ন্ত্রন করবে। কারন ৫ বছর রবীন্দ্র অধ্যায়নে পড়াশোনা করে একজন শিক্ষার্থী সর্বপরি একজন সাংস্কৃতিমনা এবং ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারবেই।
এডু আইকন: বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘রবীন্দ্রনাথ’ নিয়ে উচ্চতর গবেষণার সুযোগ রয়েছে কি?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে শিক্ষার্থীদের ৫ বছর ‘রবীন্দ্র অধ্যায়ন নামক একটি বিভাগে পড়ানো হবে। এছাড়া রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে গবেষণার সুযোগ তৈরির জন্য রবীন্দ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে একটি ইনস্টিটিউট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু নামে একটি গবেষণা ইনস্টিটিউট তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র সাহিত্যের থেকে বেশি তাঁর সামাজিক কর্মকান্ডের বিষয়াদি নিয়ে গবেষণার সুযোগ রাখার অংশ হিসেবে তাঁত বিভাগ, সমবায় ও কৃষি বিভাগ, এনিম্যাল সায়েন্স নামক বিভাগ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার বিশেষ একটি পরিকল্পনা হচ্ছে- আমি এখানে একটি সেন্ট্রাল সাপোর্ট সিস্টেম গড়ে তুলবো, যেখানে একবার ঢুকলে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় সব উপাদান এর মধ্যেই পাবে। এই সেন্ট্রাল সাপোর্ট সিস্টেমে পৃথিবীর সমস্ত লেখকদের বই রাখার চেষ্টা করবো।
এডু আইকন: স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরতে কত সময় লাগবে?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: বর্তমানে শাহহজাদপুরের তিনটি কলেজ-শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, মওলানা সাইফুদ্দিক এহিয়া ডিগ্রি কলেজের সম্পূর্ণ নতুন তিনটি ভবনে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এটা আমাদের কাছে খুবই আনন্দের যে, এই কলেজসমূহ আগামী ৫ বছরের জন্য এই তিন ভবন সম্পূর্ণ বিনা ভাড়ায় আমাদেরকে প্রদান করেছে। তবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈত্রিক জমিদারীতেই অর্থাৎ কৃষকদের গরু চাষ ও ধান চড়ানোর জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে ১০৭০ একর জমি লিখে দিয়েছিলেন তার থেকে ২০০ একর জমিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে, যেখানে আগামী ২ বছরের মধ্যেই একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে আশা করছি। পূর্বে এই জায়গাকে বলা হতো ‘বাথান’, বাসস্থান থেকে মূলত এই কথাটি এসেছিল।
এডু আইকন: অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো বৃত্তি চালু রয়েছে?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: এখন পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কোনো বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে না। তবে বৃত্তির জন্য আবেদন করে বাজেট চাওয়া হয়েছে।
এডু আইকন: শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: যেহেতু এবছরই প্রথম রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে তাই এত তাড়াতাড়ি সকল শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিকের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি, তবে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ জন নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সেখানকার সংসদ সদস্য জনাব হাসিবুর রহমান স্বপনের সহায়তায় ১০০ জন ধারন ক্ষমতার একটি ভবনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে বর্তমানে ১৫-২০ জন নারী শিক্ষার্থী নিরাপদে ও সুন্দরভাবে রয়েছে।
এডু আইকন: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কি ‘ছাত্র রাজনীতি’র অনুমোদন দিবে?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: একজন শিক্ষার্থীর নিজের বিকাশের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্যই ছাত্র সংগঠনের প্রয়োজন রয়েছে। এমনকি আমি নিজেও ৮ম শ্রেণীতে থাকা অবস্থাতেই ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত হই এবং আমি এসএসসি পাস করে যখন কলেজে ভর্তি হই তখন ছাত্র রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের সাথে জড়িত ছিলাম। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজনীতি হবে শিক্ষা কেন্দ্রিক, যেমন- আমার শিক্ষার্থীরা আমার কাছে এসে দাবি জানাবে লাইব্রেরীতে কেন ভালো জার্নাল নেই! আমি নিজে তখন তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করবো।
কিন্তু সাংস্কৃতির অভাবে আমাদের দেশের ছাত্র সংগঠনের অবস্থা বর্তমানে ভালো নয়। তবে একজন শিক্ষার্থী জাতীয় রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট হতেই পারে, সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয় হবে কিন্তু জাতীয় রাজনীতি সুস্থ চিন্তার হবে।
এডু আইকন: দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে জাতির উন্নয়ন। কোনো ব্যক্তির উন্নয়ন নয় গোটা জাতির উন্নয়ন। তবে জাতির উন্নয়নের সাথে ব্যক্তির উন্নয়ন সম্পর্কিত। সেই জাতির উন্নয়নের জন্য রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় একদল মানুষ তৈরি করতে চায় যারা শিক্ষাকে প্রযুক্তি হিসেবে গ্রহণ করবে। শিক্ষা এখন আর শুধু জ্ঞানার্জনের বিষয় নয়। এখন শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে প্রযুক্তিবিদ হওয়া এবং সৃষ্টিশীল হওয়া। আমি আমার শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিবীদ ও সৃষ্টিশীল হওয়ার আহ্বান জানাবো। এভাবেই রবীন্দ্রনাথের চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে আমরা জাতির উন্নয়নে আমাদের শিক্ষার্থীদের উদ্বুব্ধ করবো।
এডু আইকন: শিক্ষার্থীদের 'বাংলা'র প্রতি আগ্রহ কমার বিষয়ে বাংলার শিক্ষক হিসেবে আপনার মতামত কি?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: বর্তমানে ৯৯ ভাগ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে একটা ভালো চাকরি। বাংলায় পড়লে একজন শিক্ষার্থী ভালো চাকরি করতে পারবে না এটা শুধু শিক্ষার্থীদের একার নয় তাদের পরিবারেরও থাকে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদেরই বর্তমানে চিন্তা থাকে একটি ভালো চাকরি পেতে হলে অবশ্যই বিবিএ, এমবিএ করতে হবে। এসকল কারনে এখন বাংলার প্রতি শিক্ষার্থীরা আগ্রহ হারাচ্ছে।
তবে আমি বলবো, একমাত্র বাংলা পড়লেই আমি আমার দেশকে জানতে পারি, আমার মাটিকে জানতে পারি, আমি আমার মা’কে জানতে পারি, আমি আমার মাতৃভাষাকে জানতে পারি। মা, মাটি ও মাতৃভাষাকে না জানলে কেউ ভালো মানুষ হতে পারে না। আর বাংলা বিষয় ‘মা,মাটি ও মাতৃভাষা’ এই তিন ‘ম’ কে শিখতে, বুঝতে সহায়তা করে।
এডু আইকন: শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা’র প্রতি আগ্রহ ফিরিয়ে আনতে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: ‘বাংলা’র প্রতি আগ্রহ ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’ এবং ‘বাংলাদেশ অধ্যায়ন’ আবশ্যিক করার আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা যে বিভাগেই পড়ুক না কেন এখন তাদের এই দুইটি বিষয় পড়তেই হবে। তবে শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা’র প্রতি আগ্রহ ফিরিয়ে আনতে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে শিক্ষকরা। আমি মনে করি, ‘শিক্ষক এবং অভিভাবকরা যৌথভাবে শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে জানতে সহায়তা করবে। এতে তরুণ প্রজন্মকে নিজের দেশ সম্পর্কে জানতে হবে, নিজের ঠিকানা সম্পর্কে জানতে হবে। কারন মানুষ ধর্মান্তরিত হতে পারবে কিন্তু কখনোই ভাষান্তরিত হতে পারবে না। কাজেই, একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে হলে আমাদের অবশ্যই নিজের ভাষা, নিজের সংস্কৃতিকে ধারণ করতে হবে।
এডু আইকন: তরুণ সমাজ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কতটুকু ধারন করতে পেরেছে?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্তমান তরুণ সমাজ এখনো মুক্তিযুদ্ধকে পুরোপুরি নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে পারে নি। তরুণ প্রজনমকে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও এর তাৎপর্যকে আরো বেশি জানার জন্য মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সমৃদ্ধ বই পড়তে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের মাঝে ধারণ করে তরুণ সমাজকে একটি অসম্প্রদায়িক ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
এডু আইকন: মিডিয়ায় ‘বাংলা’ মানোন্নয়নে কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: মিডিয়ায় ‘বাংলা’ মানোন্নয়নে কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত?
ড. ঘোষ:- আমার মনে হয়, প্রতিটি টিভি চ্যানেলেই মাতৃভাষার ওপর একটি অনুষ্ঠান করা উচিত। বিগত ১৩ বছর যাবত শুধুমাত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনে আমরা মাতৃভাষার ওপর একটি অনুষ্ঠান করে আসছি যেখানে নিজের মাতৃভাষা সম্পর্কিত জ্ঞানের কথা রয়েছে। প্রতিটি পত্রিকা এবং অনলাইন পত্রিকায় মাতৃভাষামূলক একটি কলাম থাকা উচিত এবং যারা এ ধরনের কাজের সাথে যুক্ত যেমন- এডিটর বা যারা বাংলা লেখার সাথে যুক্ত হবে তাদের ভালো ভাষা বিশেজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে যদি নির্বাচন করা যায় তবে এই জায়গার উন্নতি হতে পারে।
আমি মনে করি, মিডিয়াতে যারা রিপোর্ট করবে, যারা উপস্থাপন করবে, যারা এডিটিংয়ের সাথে যুক্ত তাদের ৬ মাসে অন্তত একটি প্রশিক্ষণ প্রদান করা উচিত। বাংলার সাথে ইংরেজী মিশ্রণ নিয়ে আমি বলবো, এটি সম্পূর্নই দক্ষতা ও সচেতনতার বিষয়। ১৮৩৫ সাথে ‘কলকাতা মেডিকেল কলেজ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে ১৮৬৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৫ বছর কলকাতা মেডিকেল কলেজে চিকিৎস্যা শাস্ত্র সম্পূর্ণ বাংলায় পড়ানো হয়।
এডু আইকন: শিক্ষার্থীদের সহায়তায় অনলাইন এডুকেশন মিডিয়া কি ভূমিকা রাখছে?
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ: শিক্ষার্থীদের সহায়তায় অনলাইন এডুকেশন মিডিয়াগুলোর গুরুত্ব এখন অনেক। নিজেদের ব্যস্ততার মাঝে অনেকটা সময় বসে পত্রিকা পড়ার সময় মানুষের হচ্ছে না, তাই গাড়িতে বসে বা কোথাও বসে থাকাকালীন নিজেদের মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে পত্রিকাগুলোতে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে।
এই যে আপনারা ‘এডুআইকন ডট কম’ আপনারা বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা ভিত্তিক তথ্য দিচ্ছেন, আর হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা এগুলো পড়ছে এতে করে তারা আরো অনেক বেশি জানতে পারছে, তারা তাদের জ্ঞানকে আরো বৃদ্ধি করতে পারছে। তারা তাদের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য নিজেকে তৈরি করার অনেক সহায়ক তথ্য পাচ্ছে। এরজন্যই এডুইকনের মত অনলাইন এডুকেশন মিডিয়াগুলোর গুরুত্ব এখন অনেক বেশি। আপনাদেরও শিক্ষার্থীদের সহায়তার মাধ্যমে আরো এগিয়ে যেতে হবে।
Related Interview:1. অধ্যাপক ড. মো. সাঈদ সালাম: উপাচার্য, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ2. অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: উপাচার্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
||
- মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ
- এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট কোর্স- ইংলিশ, চাইনিজ, আরবি, ফ্রেঞ্চ
- বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল-বিজ্ঞপ্তি
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর
- খুবির ৬ষ্ঠ সমাবর্তন ২২ ডিসেম্বর
- জবির সমাবর্তন ১১ জানুয়ারি
- জবিতে শূন্য আসনে ভর্তির সাক্ষাৎকার শুরু ২০ ডিসেম্বর
- রাবিতে আন্তর্জাতিক ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু বৃহস্পতিবার
- অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ১৩ জানুয়ারি; মাস্টার্স রিলিজ স্লিপ আবেদন শুরু ১৯ ডিসেম্বর
- ডিজিটাল মেলা-২০২০ উপলক্ষে টেলিকমিউনিকেশন দফতরের রচনা প্রতিযোগিতা
- ঢাকা পলিটেকনিকে জানুয়ারি-জুন’২০ সেশনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি শুরু
- জেএসসি-পিইসির ফল বছরের শেষ দিন
- ৪০তম বিসিএস: লিখিত পরীক্ষা ৪-৮ জানুয়ারি
- তিতুমীর কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের নিবন্ধন শেষ আজ
Submit Your Comments: