উদ্ভাবন-গবেষণায় শাবিপ্রবি থেকে যেসবের পথচলা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় ১৯৮৬ সালের ২৫ আগস্ট। দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সিলেটে ১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনটি বিভাগ নিয়ে এর একাডেমিক যাত্রা শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৭টি অনুষদের অধীনে রয়েছে ২৭টি বিভাগ। এছাড়াও রয়েছে ২টি ইনস্টিটিউট।
উদ্ভাবন ও গবেষণায় বর্তমানে দেশের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে শাবিপ্রবি। দেশে আলোকোজ্জ্বল দীপ্তি ছড়ানোর পাশাপাশি সুনাম কুড়িয়েছে আন্তর্জাতিক পরিসরেও। নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। বেশকিছু প্রথমের সাক্ষী শাবিপ্রবি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
মোবাইল ফোনে ভর্তি প্রক্রিয়া:
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য একসময় লাইনে দাঁড়িয়ে ফরম কিনতে হতো। জমা দেওয়ার ক্ষেত্রেও ছিল একই নিয়ম। তখন শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। এ ভোগান্তি লাঘব করতে ২০০৯ সালে শাবিপ্রবি শুরু করেছে মোবাইল ফোনে ভর্তি প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে মোবাইলে এসএমএস করে ফরম সংগ্রহ, জমাসহ বিভিন্ন ভর্তি প্রক্রিয়ার কাজ করা হয়।
ক্যাম্পাসভিত্তিক ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক:
দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ১৯৯৯ সালে শাবিপ্রবিতে প্রথম ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়। ২০১০ সাল থেকে ছাত্রীদের আবাসিক হল এবং পরে ছাত্রদের তিনটি আবাসিক হলে ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়। বর্তমানে শিক্ষাভবন, লাইব্রেরি ভবন, কেন্দ্রীয় মিলনায়তন, আবাসিক হলসহ পুরো ক্যাম্পাস রয়েছে এর আওতায়।
বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা:
দেশে প্রথম বাংলা ভাষায় সার্চ ইঞ্জিন ‘পিপীলিকা’ তৈরি করে এ বিশ্ববিদ্যালয়। এতে সংবাদ পাঠ, লাইব্রেরি, কেনাকাটা, জব সার্চ, বাংলা বানান সংশোধনী ও শব্দ কল্প ইত্যাদি সেবা পাওয়া যায়।
বাংলা সার্চের জন্য নিজস্ব একটি বাংলা অভিধানও ব্যবহার করা হয় এতে। যদি ব্যবহারকারী কোনো শব্দের ভুল বানান দেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে সঠিক বানান খুঁজে নিয়ে সেই নতুন শব্দ দিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে ফলাফল দেবে এটি। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারকারীকে জানিয়ে দেবে তার কোনো শব্দের বানান ভুল ছিল কিনা!
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন একুশে বাংলা কিবোর্ড:
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ‘একুশে বাংলা কিবোর্ড’ নিজেই বুঝে ফেলবে গ্রাহক কী লিখতে চাইছেন। এটাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংযোজনের পাশাপাশি দ্রুত টাইপিং ও স্পর্শ করে লেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
ফলে টাইপ না জানলেও যে কেউ সহজেই বাংলা টাইপিং শিখতে পারবেন এর মাধ্যমে। কিবোর্ডটি যত বুদ্ধিমান হবে তত কম লিখতে হবে, ততই কমবে পরিশ্রম।
শিক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়মিত পেতে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা Log In করুন।
Account Benefitক্যান্সার শনাক্তকরণ কিট:
চলতি বছর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করার মাধ্যমে ক্যান্সার শনাক্তকরণ কিট উদ্ভাবন করে শাবিপ্রবির একদল গবেষক। খুব অল্প খরচে কোনো ব্যক্তির শরীরে ক্যান্সার আছে কী নেই তা জানা যাবে এ কিটের মাধ্যমে। এ পরীক্ষার জন্য সময় লাগবে ৫ থেকে ১০ মিনিট। খরচ হবে ৫০০ টাকারও কম। রক্ত থেকে লাল অংশ বাদ দিয়ে কেবল সেরাম ডিভাইসে দিলে প্যারামিটারে এর মান জানা যাবে। আর সেটা থেকেই বোঝা যাবে শরীরে ক্যান্সার আছে কী নেই।
বাংলা কথাবলা ও হাঁটাচলা করা রোবট:
দেশে প্রথম ‘রিবো’ নামে বাংলা ভাষাভাষী রোবট তৈরি করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ গবেষক। ‘রিবো’ বাংলায় কথা বলতে পারলেও হাঁটাচলা করতে পারতো না। পরে তৈরি করা হয় হাঁটাচলা করা ও বাংলায় কথা বলতে পারা ‘রোবট-লি’।
এ রোবটে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সংযুক্তির ফলে বাংলায় কথা বলার পাশাপাশি হাঁটাচলা করতে পারে। এছাড়া হাত ও পা নাড়ানোসহ নানা অঙ্গভঙ্গিও করতে পারে।
রোড পেইন্টিংয়ে রেকর্ড:
পাইয়ের মান লিখে দীর্ঘতম রোড পেইন্টিং করে দেশ ও দেশের বাইরে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের মূল গেট থেকে এক কিলোমিটার রোড ধরে শাহপরাণ হল পর্যন্ত পাই এর মান পেইন্টিং করেন তারা।
প্রায় ৫শ’ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে করা হয় এ পেইন্টিং। পাই নিয়ে ব্যতিক্রমী রোড পেইন্টিং বিরল।
অটোমেটিক ড্রেন ক্লিনিং সিস্টেম:
শ্রমিক ছাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে নর্দমার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে তৈরি করা হয় অটোমেটিক ড্রেন ক্লিনিং সিস্টেম। এতে পানি টেনে নেওয়ার একটি পাম্প মেশিন থাকবে, যার মাধ্যমে আবর্জনা সামনে চলে আসবে। পরে নেটের মাধ্যমে সেটা তুলে নিয়ে একটা বক্সের মধ্যে রাখবে। বক্স ভর্তি হয়ে গেলে অটোমেটিক পেছনে গিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলে আবার সামনের দিকে আগাবে।
তাছাড়াও ময়লার স্তূপ কাটার জন্য সামনে কাটার থাকবে। স্টার্ট দেওয়ার পর অটোমেটিক চলতে থাকবে এটি। অতি সহজে এবং কোনো দুর্ভোগ ছাড়া ড্রেন পরিষ্কার করা যাবে এর মাধ্যমে।
শিক্ষার্থী ভর্তিতে ডোপ টেস্ট:
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম শিক্ষার্থী ভর্তিতে ডোপ টেস্ট চালু করা হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতে শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত কিনা নিশ্চিত হওয়া যাবে সহজে। ২০১৯-২০ সেশনে ভর্তি করার সময় ডোপ টেস্ট করা হয় শিক্ষার্থীদের।
এছাড়াও বছরভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা ব্যবস্থা, সেকেন্ড মেজর কোর্স সিস্টেম চালু, ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার ক্ষেত্রেও শাবিপ্রবি দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পথ প্রদর্শক।
More detail about
Shahjalal University of Science and Technology
- মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ
- এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট কোর্স- ইংলিশ, চাইনিজ, আরবি, ফ্রেঞ্চ
- বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল-বিজ্ঞপ্তি
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর
- খুবির ৬ষ্ঠ সমাবর্তন ২২ ডিসেম্বর
- জবির সমাবর্তন ১১ জানুয়ারি
- জবিতে শূন্য আসনে ভর্তির সাক্ষাৎকার শুরু ২০ ডিসেম্বর
- রাবিতে আন্তর্জাতিক ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু বৃহস্পতিবার
- অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ১৩ জানুয়ারি; মাস্টার্স রিলিজ স্লিপ আবেদন শুরু ১৯ ডিসেম্বর
- ডিজিটাল মেলা-২০২০ উপলক্ষে টেলিকমিউনিকেশন দফতরের রচনা প্রতিযোগিতা
- ঢাকা পলিটেকনিকে জানুয়ারি-জুন’২০ সেশনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি শুরু
- জেএসসি-পিইসির ফল বছরের শেষ দিন
- ৪০তম বিসিএস: লিখিত পরীক্ষা ৪-৮ জানুয়ারি
- তিতুমীর কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের নিবন্ধন শেষ আজ
Submit Your Comments: