স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ: ইউজিসি

ইউজিসি

বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ায় কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। নিয়ম না মানা এসকল বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে বলা হয়েছে। অথবা আগামী জানুয়ারি থেকে তাদের নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী বছরের জুনের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার নির্ধারিত সময় বেঁধে দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রনালয়। এর অন্যথা হলে ওই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই থেকে ভর্তি বন্ধ করা হবে। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জিন্নাত রেহানা স্বাক্ষরিত সরকারের এই নির্দেশ সেসমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদারকির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (ইউজিসি) অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নানকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী সাময়িক সনদের মেয়াদোত্তীর্ণ ৪৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর সংক্রান্ত গঠিত কমিটির সভা শেষে গত মাসে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

শিক্ষামন্ত্রনালয়ের প্রাপ্ত তথ্য মতে, স্থায়ীক্যাম্পাসে না যাওয়া বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের বছর থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কিনলেও এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজ শুরু করেনি। গত আগস্টে মন্ত্রণালয় সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছে, অনুমোদিত নয়টি প্রোগ্রামের মধ্যে পাঁচটির শিক্ষা কার্যক্রম ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে হবে।

এ ছাড়া জানুয়ারি থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে এসব প্রোগ্রামে ছাত্র ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কিনলেও গত আগস্টের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু করেনি এমন কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে সতর্কবার্তা দিয়ে সরকার বলেছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারলে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে।

এ তালিকার আরো রয়েছে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজিকে আটটি প্রোগ্রামে, মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০টি প্রোগ্রামসহ আরও পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে জানুয়ারি থেকে ভর্তি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

শিক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়মিত পেতে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা Log In করুন।

Account Benefitআশা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস তুরাগের নিশাতনগরে হলেও মোহাম্মদপুরের শ্যামলীতে বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সূত্রমতে, এখানে আটটি প্রোগ্রাম পরিচালিত হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারলে জানুয়ারি থেকে এসব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া রয়েছে: রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, বগুড়ার পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালিত হলেও আগস্টের এক নির্দেশনায় সরকার বলেছে নির্ধারিত জমি আগামী জুনের মধ্যে রেজিস্ট্রিপূর্বক হস্তান্তর করতে হবে। অন্যথায় আগামী জুলাই থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে।

এ তালিকায় দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটিও রয়েছে। চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়কে গত ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে আগস্ট থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে নতুন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। চট্টগ্রামের একটি বিশ্ববিদ্যালয় ধানমন্ডির সেন্ট্রাল রোডে আউটার ক্যাম্পাস পরিচালনা করে আসছিল। সেই শাখা বন্ধ করে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে বলা হয়েছে। মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আরও কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে সতর্কবার্তা দিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে গত অক্টোবর থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে বলেছে সরকার।

বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী যথাসময়ে নিজস্ব জমিতে ক্যাম্পাস পরিচালনার জন্য বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ বার্তাও পাঠিয়েছে শিক্ষামন্ত্রনালয়।

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আইন মেনে চলছে। কিন্তু দিনের পর দিন অনিয়ম করে আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে চলতে দেয়া হবে না।