বাকৃবিতে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কৃষি বিতর্ক উৎসব শুরু

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

দেশে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শুরু হয়েছে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কৃষি বিতর্ক উৎসব।

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কৃষি। দেশের শতকরা ৮০ ভাগ লোক কৃষির সঙ্গে জড়িত। এ দেশের যত বিতর্ক তার বেশিরভাগই কৃষি, কৃষক, কৃষিজাত পণ্য নিয়ে। কৃষকের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে চলে রাজনীতি। কৃষকের নিজেদের পণ্যের দাম নির্ধারণ করার কথা, কিন্তু তা তারা পারছেন না। দাম নির্ধারণ করে থাকে অন্য কেউ। এতে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে শস্য উৎপাদন করে থাকেন, সেই কৃষকই সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন। কৃষি উৎপাদনের চেয়ে কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ, নাকি কৃষি উৎপাদন- কোনটিতে নজর দেওয়া হবে, কৃষিবিদের অকৃষিজ পেশা গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করা হবে কি হবে না? কৃষি মন্ত্রালয়ের দায়িত্ব কৃষিবিদদের হাতে হস্তান্তর করবে কি করবে না? প্রশ্নগুলোর যথার্থ উত্তরের পক্ষে-বিপক্ষে লড়ে যাচ্ছেন বিতার্কিকরা।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে ও ডিবেটিং সংঘের সহযোগিতায় কৃষি ও কৃষি সম্পর্কিত বিষয়ে পড়ানো হয় এমন ১০টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এতে অংশগ্রহণ করছে। প্রথম কৃষি বিতর্ক উৎসবে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো বাংলাদেশ কৃষি, শেরে-ই বাংলা কৃষি, সিলেট কৃষি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, খুলনা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়মিত পেতে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা Log In করুন।

Account Benefitগতকাল শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭) সকালে বেলুন উড়িয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর। এরপর হেলিপ্যাড থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলানায়তনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বিতার্কিকদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাকৃবি উপাচার্য ড. মো. আলী আকবর বলেন, "বিতর্ক এমন একটি জিনিস, যেটি করতে হলে প্রচুর জ্ঞানের প্রয়োজন পড়ে। এর মাধ্যমে মেধার বিকাশ ঘটে। " তিনি কৃষকের কল্যাণে কাজে লাগে এমন কৃষি বিষয়ক বিতর্ক করার আহ্বান জানান বিতার্কিকদের।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিউটের মহাপরিচালক ড. মো. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, "বির্তক কতখানি জরুরি- তা আমার নিজ কর্মক্ষেত্র থেকে বুঝতে পারছি। যারা ছাত্রজীবনে বিতর্ক করে থাকেন, তারা সকলক্ষেত্রে এগিয়ে থাকেন। কৃষি সেক্টরের অনেক বিতর্কিত বিষয় রয়েছে। " বিতর্কের মাধ্যমেই এগুলোর সমাধান করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

বাকৃবি ডিবেটিং সংঘের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, "বাংলাদেশ সৃষ্টির শুরু থেকেই কৃষিবিদরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। কৃষক ও কৃষিবিদদের কল্যাণেই দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন করতে হলে সবার আগে কৃষি সেক্টরকে এগিয়ে নিতে হবে। " এ ক্ষেত্রে কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত সব ধরনের বিতর্কের অবসান করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
More detail about
Bangladesh Agricultural University